খুলনা, বাংলাদেশ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

৯ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

ঢাকা: বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের বক্তব্য প্রত্যাহার করে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা এবং বেপরোয়া গাড়ি চালকদের ফাঁসির দাবিসহ ৯ দফা দাবি জানিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

শহীদ রমিজউদ্দিন কলেজের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী সাইদুল ইসলাম আপন বলেন, বাসচাপায় সহপাঠীর মৃত্যুর ঘটনায় আমরা ৯ দফা দাবি জানিয়েছি। আমাদের দাবি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মেনে নিয়ে ৭ দিনের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে হবে। আমাদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে আবারো আন্দোলন চলবে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি:

১. বেপোরোয়া ড্রাইভারকে ফাঁসি দিতে হবে এবং এই শাস্তি সংবিধানে সংযোজন করতে হবে।
২. নৌ-পরিবহন মন্ত্রীর গতকালের বক্তব্য প্রত্যাহার করে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।
৩. শিক্ষার্থীদের চলাচলে এমইএস ফুটওভার ব্রিজ বা বিকল্প নিরাপদ ব্যবস্থা নিতে হবে।
৪. প্রত্যেক সড়কের দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাতে স্পিড ব্রেকার দিতে হবে।
৫. সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছাত্র-ছাত্রীদের দায়ভার সরকারকে নিতে হবে।
৬. শিক্ষার্থীরা বাস থামানোর সিগন্যাল দিলে, থামিয়ে তাদের বাসে তুলতে হবে।
৭. শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
৮. ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় চলাচল বন্ধ ও লাইসেন্স ছাড়া চালকরা গাড়ি চালাতে পারবে না।
৯. বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া যাবে না।

এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কলেজের শিক্ষক, র‌্যাব-পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করছিলেন। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অবরোধ কর্মসূচিতে অনড় রেখে স্লোগান দিয়ে যাচ্ছে।

র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস) আনোয়ার লতিফ খান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে এ সময় বলেন, “গতকালের দুর্ঘটনার পর থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে জড়িত তিনটি বাসের তিনজন ড্রাইভার ও দুইজন সহকারীকে আটক করা হয়েছে। আমি তোমাদের আশ্বস্ত করতে চাই দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তোমরা আন্দোলন প্রশমিত করো।”

সোমবার (৩০ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে শিক্ষার্থীরা শহীদ রমিজ উদ্দিন কলেজের সামনের রাস্তায় মানববন্ধনে দাঁড়াতে গেলে পুলিশের বাধায় শুরুতে তাদের কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায়।

এরপর কুর্মিটোলা হাসপাতালের সামনে রাস্তা অরবোধ করতে গেলে সেখান থেকেও ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেয় পুলিশ। এ সময় উত্তরাগামী বাস থামিয়ে বেশকিছু শিক্ষার্থীকে পুলিশ সদস্যরা জোর করে বাসে তুলে দেয় বলে অভিযোগ করে শিক্ষার্থীরা।

এরপর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহীদ রমিজ উদ্দিন কলেজের সামনে ফের জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। এ সময় তাদের চারপাশ থেকে ঘিরে রাখেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এসে বিক্ষোভে অংশ নিতে থাকে। দুপুর ১২টা নাগাদ বিএএফ শাহীন কলেজ, ভাষানটেক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, আদমজী ক্যান্টনমেন্ট, তেজগাঁও কলেজ, বাংলা কলেজ, সরকারি বিজ্ঞান কলেজসহ আশপাশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে অংশ নিয়ে বিমানবন্দর সড়কের উভয় পাশ বন্ধ করে দেয়।

গতকাল রোববার (২৯ জুলাই) কুর্মিটোলায় বাস চাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। এ ঘটনায় আহত হয় আরো বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী।